• বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ন |

শিশুর চোখের সমস্যা

eyesস্বাস্থ্য ডেস্ক: শিশুদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার পাশাপাশি চোখের সুস্থতাও সমান গুরুত্ব বহন করে।
গুরুত্ব : দৃষ্টিহীন শিশুকে অন্যের ওপর নির্ভর করে সারা জীবন কাটাতে হয়।এতে দেশ দুজন মানুষের পূর্ণাঙ্গ সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। এ ছাড়াপরনির্ভরশীলতার কারণে শিশু মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
দৃষ্টিস্বল্পতার কারণ : জন্মগত ছানি, পাওয়ারজনিত দৃষ্টিস্বল্পতা, কর্নিয়ারঘা, চোখে আঘাত, চোখের ক্যানসার (রেটিনোব্লাস্টমা) ও চোখের প্রদাহ (ইউভাইটিস)।
শিশুর চোখের অন্য সমস্যাগুলোর মধ্যে চোখের চুলকানি বা অ্যালার্জি এবং চোখ দিয়ে পানি পড়া অন্যতম।
ছানি : জন্মের পর পরই বা কিছুদিন পর এক বা উভয় চোখে সাদা আস্তর দেখা যাওয়াছানিরোগের লক্ষণ। ডেলিভারির সময় চোখে আঘাতের কারণে, গর্ভকালীন মায়ের রুবেলাজ্বর, বিভিন্ন ওষুধ সেবন এবং বংশগত কারণে শিশুর চোখের ছানি পড়তে পারে। যততাড়াতাড়ি সম্ভব অপারেশনের মাধ্যমে ছানি অপসারণ করে পরে সময়মতো কৃত্রিমলেন্স প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা সম্ভব। অপারেশনের বিলম্বেরকারণে চিরতরে শিশু দৃষ্টি হারাতে পারে।
পাওয়ারজনিত দৃষ্টিস্বল্পতা : ঘন ঘন চোখ নড়াচড়া করা, চোখ বেঁকে যাওয়া, বস্তুঅনুসরণ না করতে পারা, ঘন ঘন চোখে হাত দেওয়া, কাছে গিয়ে টেলিভিশন দেখা, মাথাব্যথা করা ইত্যাদি দৃষ্টিস্বল্পতার লক্ষণ। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চশমাব্যবহারের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।
কর্নিয়ার ঘা : অপুষ্টিজনিত কারণে ভিটামিনের অভাবে দুই চোখে ঘা হতে পারে। এছাড়া ডেলিভারির সময় চোখে আঘাতের কারণে এবং জন্মের পরে যে কোনো সময়ে জীবাণুসংক্রমণের কারণে চোখে ঘা হতে পারে। চোখে ব্যথা, আলোতে চোখ খুলতে না পারা, চোখ লাল হওয়া, কালোমণিতে সাদা দাগ পড়া এ রোগের লক্ষণ। ডাক্তারের পরামর্শেচোখের জীবাণু পরীক্ষা করে এ রোগের চিকিৎসা সম্ভব।
চোখের ক্যানসার : বিড়ালের চোখের মতো চোখ জ্বল জ্বল করা, চোখ লাল হওয়া এরোগের লক্ষণ, চোখে ব্যথা হওয়া, চোখ বেঁকে যাওয়া, চোখ ফুলে যাওয়া ইত্যাদিচোখের ক্যানসার বা রেটিনোব্লাসটোয়ার লক্ষণ। এসব লক্ষণ দেখামাত্র দেরি নাকরে চক্ষুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। চোখের ক্যানসার শরীরে ছড়িয়েপড়লে জীবন রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
চোখের অ্যালার্জি : ঘন ঘন চোখে হাত দেওয়া, চোখ কচলানো, চোখ লাল হওয়া, শুষ্কমৌসুমে এ রোগ বেশি দেখা যায়। বছরে দু-তিনবার চোখে অ্যালার্জি হতে পারে।ধুলাবালি, ধোঁয়া, বিভিন্ন খাবার এবং বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থে শরীর ও চোখেঅ্যালার্জি হতে পারে।
চোখ দিয়ে পানি পড়া : জন্মগতভাবে চোখের পানি সরে যাওয়ার নেত্রনালি বন্ধথাকলে চোখের পানি উপচে পড়ে। এতে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। দু-এক বছরের মধ্যেবন্ধনালি আপনাতেই খুলে গেলে চোখের পানি পড়া অনেকাংশে কমে যায়। ডাক্তারেরপরামর্শ মোতাবেক চোখের কোনায় মালিশ করা ও ড্রপ ব্যবহারে এ রোগের চিকিৎসাসম্ভব।
পরিশেষে বলতে হয়, শিশুরা অনেক কিছু বলে বোঝাতে পারে না। ফলে তাদেরসমস্যাগুলো অপ্রকাশ্যই থেকে যায়। এসব সমস্যা শেষ পর্যন্ত শিশুর অন্ধত্বেরকারণ হয়ে দাঁড়ায়। সুতরাং শিশুর দৃষ্টি অধিকার রক্ষায় আমাদের সচেতন হতে হবে।

 

ডা:মনিরুল ইসলাম মানিক

সাবেক আরএমও

১০০ শয্যা হাসপাতাল, সৈয়দপুর।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আর্কাইভ