• বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১১:০৮ অপরাহ্ন |

সৌদিতে জামায়াত নেতাদের সঙ্গে তারেকের একান্ত বৈঠক

New Rose Cafe, Saidpur

Tareqশংকর কুমার দে: ঈদের পর সরকার পতনের আন্দোলনে বিএনপির ঘোষণায় যুক্ত হয়ে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ও জামায়াত-শিবির। এ জন্য গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিদেশের মাটিতে। গোপন বৈঠকের মধ্যস্থতা করছে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। সৌদি আরবে এক সঙ্গে ইফতারের নামে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছেন জামায়াত নেতা যুদ্ধাপরাধীর সাজাপ্রাপ্ত আসামি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বড় ছেলে মাসুদ সাঈদী। বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াও ওমরাহ পালন উপলক্ষে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। সরকারের উচ্চপর্যায়ে এই ধরনের প্রতিবেদন দিয়েছে বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা।
ঈদের পর সরকার পতনের আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। সরকার পতনের আন্দোলনের ব্যাপারে ইতোমধ্যেই ছক তৈরি করেছে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়েতের সাবেক আমির গোলাম আযমের যাবজ্জীবন সাজা হওয়ার পর প্রকাশ্যেই যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরোধিতা করে সমালোচনা করেছে পাকিস্তান সরকারের বাংলাদেশবিরোধী অংশটি। গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর আমেরিকা, ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ অভিহিত করে প্রকারান্তরে সরকারের বিরোধিতা করে আসার প্রেক্ষাপটের সুযোগটি লুফে নিচ্ছে যুদ্ধাপরাধীরা। যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে বিদেশে জনমত গড়ে তুলতে বিদেশীদের সহায়তা পাওয়ার উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যেই জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকা অবস্থান করছেন। বর্তমানে সৌদি আরবে ওমরাহ পালন উপলক্ষে সেখানে অবস্থান করছেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। একসঙ্গে ইফতারের নামে যুদ্ধাপরাধীর মামলায় সাজাপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বড় ছেলে মাসুদ সাঈদীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার বিষয়টিকে সরকার পতনের আন্দোলনের গোপন বৈঠকের প্রকাশ্যে মহড়া বলে মনে করছে গোয়েন্দা সংস্থা।
জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোয়েন্দা সংস্থার এক উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, ওয়ান ইলেভেনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে রাজনীতি না করার জন্য বন্ডসই দিয়ে গিয়ে অসুস্থতার নামে লন্ডনে গিয়ে রাজনীতি করছেন তারেক রহমান। তিনি যদি অসুস্থই হন তাহলে দুবাই গিয়ে মায়ের সঙ্গে মিলিত হয়ে আবার সৌদি আরবে গেলেন কিভাবে? দুবাই, সৌদি আরব যেতে পারলে বাংলাদেশে আসতে পারেন না কেন? লন্ডনে বসে সরকারবিরোধী আন্দোলনের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়ে নেতাকর্মীদের মামলা, মোকদ্দমা, অত্যাচার, নির্যাতন, অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিতে দ্বিধা করছেন না অথচ সরকারের ভয়ে তারেক রহমান অসুস্থতার কথা বলে নিজে আন্দোলনে মাঠ থেকে কৌশলে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখছেন। বিদেশের মাটিতে বসে দেশের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে ষড়যন্ত্রের যে জাল বুনে চলেছেন তারই ধারাবাহিকতার বিস্তার করার উদ্দেশ্যে যুদ্ধাপরাধীর ছেলের সঙ্গে গোপন বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন সৌদি আরবের মাটিতে।
সরকারের উচ্চপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি মামলায়ও তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা আছে। অপর মামলাগুলোর বিষয়ে বেশিরভাগই উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ রয়েছে। দেশে এলে বিমানবন্দর থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হতে পারেÑ এমন আশঙ্কা থেকে দেশে আসছেন না তারেক রহমান। বিদেশের মাটিতে বসেই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নামে যুদ্ধাপরাধী ও বাংলাদেশবিরোধী অংশের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করছে যা, ওমরাহ পালন উপলক্ষে সৌদি আরবে সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদীর সঙ্গে একসঙ্গে ইফতারের নামে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছেন।
গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র জানান, একসঙ্গে ইফতারের নামে সৌদি আরবে তারেক রহমানের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন শুধু যুদ্ধাপরাধীর ছেলেই নয়, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থসহ কয়েক নেতা। তাঁরা একে অন্যের সঙ্গে কুশল বিনিময় ছাড়াও দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। তারেক রহমানের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন পার্থ এবং মাসুদ সাঈদী। তাঁরা মূলত বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ঘোষণা দেয়া ঈদের পর সরকার পতনের আন্দোলনের কৌশল নিয়ে আলোচনায় যুদ্ধাপরাধী ও জামায়াত-শিবিরকে সক্রিয়ভাবে মাঠে নামানোর প্রস্তুতির বিষয়ে প্রাধান্য দিয়েছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরোধিতা করে তা বন্ধ করার জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করে চলেছেন জাতিসংঘ ও আমেরিকার নীতি নির্ধারক পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের মদদে ঈদের পর সরকার পতনের আন্দোলনের বিষয়ে ওমরাহ পালন উপলক্ষে সৌদিতে যাওয়া নেতৃবন্দের যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে তাতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল ও সাজা বন্ধের বিষয়টিও যুক্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায় ঘোষণা হওয়ার পর দেশব্যাপী জামায়াত-শিবির যেভাবে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোলবোমা মেরে শিশু-কিশোরসহ নিরীহ নিরপরাধ মানুষজনক আগুনে পুড়িয়ে হতাহত, পঙ্গু, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা, থানায় আক্রমণ, পুলিশের অস্ত্র লুট, নির্বিচারে নৈরাজ্য ও নাশকতা চালিয়েছে আবারও তারা সরকার পতনের আন্দোলনের নামে তার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তার ভাষায়, ঈদের পর সরকার পতনের আন্দোলনের নামে সৌদি ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের ছক তৈরি করা হচ্ছে। উৎসঃ   জনকন্ঠ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আর্কাইভ