সিসি নিউজ: নীলফামারীতে ভিজিএফ’র চাল উদ্ধার নিয়ে তেলেসমাতি কান্ড ঘটিয়েছে প্রশাসন। উদ্ধার করা চাল নিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের বাদ দিয়ে গঙ্গাচড়া উপজেলার এক পরিবহন ব্যবসায়ী ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার এক চাল ব্যবসায়ীকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অপরদিকে একই দিনে ভিজিএফ’র চাল চুরির অভিযোগে এক ইউপি সদস্যকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। চাল লুটপাটের প্রকৃত নায়কদের বাদ দিয়ে এ মামলা দায়েরের ঘটনায় জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে এবং এলাকায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলায়।
জানা যায়, গত ২৩ সেপ্টেম্বর জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নে ৭৫.৩৭ মেট্রিক টন চাল বিতরন করা হয়। এ চাল বিতরনে ইউপি সদস্যগন নানা অনিয়মের আশ্রয় গ্রহন করে বলে অভিযোগে প্রকাশ। ওই ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড সদস্য হোসেন আলী, ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য তহিদুল ইসলাম ও ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য মনছুর আলী ভুয়া নাম সৃষ্টি করে অর্ধশতাধিক বস্তা চাল নিজেরাই আত্বসাৎ করে সিঙ্গেরগাড়ী গ্রামের আবেদ খাসির ছেলে মুদি ব্যবসায়ী আনিছুর রহমানের কাছে বিক্রি করে দেয়। অপরদিকে ওই সকল ইউপি সদস্য ইউনিয়ন পরিষদের পরিবর্তে ক্ষমতার দাপটে বিধিবহির্ভূতভাবে তাদের নিজ বাড়িতে কিছু লোকের কাছে চাল বিতরন করে। বাকী চাল তারা মনছুর মেম্বারের আত্বীয় মহসেন নামের এক ব্যাবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেয়। মহসেন তার কেনা ২৫ বস্তা চাল রংপুরের লালবাগে বিক্রির উদ্দেশে গঙ্গাচড়া উপজেলার পরিবহন ব্যাবসায়ী আনিছুর রহমানের সিঙ্গেরগাড়ী গ্রামের একতার বাজারের গুদামে তার অনুপস্থিেিত তার গুদাম শ্রমিকদের বুঝিয়ে রাতের জন্য জমা রাখেন। পরদিন গুদাম মালিকের ভাড়া দেয়া পিকআপে করে রংপুরে নিয়ে যাবে বলে শ্রমিকদের জানানো হয়। এক পর্যায়ে রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযান চালিয়ে চালের বস্তা উদ্ধার করে এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ওবায়দুর রহমান বাদী হয়ে গুদাম মালিক আনিছুর রহমান ও অপর চাল ব্যাবসায়ী আনিছুর রহমানকে আসামী করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং-০৫, তারিখ-২৪/০৯/২০১৫। চাল বিক্রির সময় হাতে নাতে জনতার কতৃক আটককৃত ইউপি সদস্য তহিদুলকে মামলায় সন্দেহভাজন হিসাবে দেখানো হয়। চাল চুরির অপর দুই ইউপি সদস্য’র ব্যাপারে কোন ব্যাবস্থাই নেয়া হয় নি। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকাবাসী মোশারফ হোসেন, লুৎফর রহমান, রফিকুল ইসলাম অনেকে জানান, ইউপি সদস্য হোসেন আলী, তহিদুল ইসলাম ও মনছুর আলী প্রকাশ্য চাল বিক্রি করছেন এ নিয়ে ইউএনও সাহেবকে জানালেও তিনি ঘটনাস্থলে ব্যাবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেও কোন ব্যাবস্থা নেননি। গুদাম মালিক আনিছুরের অনুপস্থিতিতে তার কর্মচারীদের বুঝিয়ে পিকআপ ভাড়া করা হয়েছে এ মর্মে তার গুদামে চাল জমা রাখেন চাল ব্যবসায়ী মহসেন আলী। আর এ অপরাধে ব্যাবসায়ী আনিছুরের নামে মামলা করে ইউএনও সাহেব অথচ প্রকৃত অপরাধীরা ধরাছোয়ার বাইরে রয়ে যায়। তারা বিষয়টির নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে ন্যায়বিচার দাবী করেন।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান জানান, আইনের মধ্যে থেকেই কাজ করেছি কোন ব্যাত্যয় হয়নি, পক্ষে বিপক্ষে লোক থাকবেই।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এ ব্যাপারে ইউএনও সাহেব বলতে পারবে তিনি মামলায় যা করেছেন তাই আছে। তবে মামলার তদন্ত চলছে তদন্তে যা আসবে তাই হবে।