সিসি নিউজ : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমাদ বলেছেন, স্থানীয় সরকারের পৌর নির্বাচনে মেয়র পদ দলীয়ভাবে নির্বাচন হলেও সব প্রার্থীর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে। সে জন্যই নতুন করে নির্বাচনী আচরণবিধি তৈরি করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের মিডিয়া সেন্টারে মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তফসিল ঘোষণাকালে এ সব কথা বলেন তিনি। এ সময় নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হাফিজ, মো. শাহনেওয়াজ, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম, উপ-সচিব শামসুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
হাতে সময় কম থাকায় নতুন আচরণবিধি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা সম্ভব হয়নি বলে জানান সিইসি।
সব রাজনৈতিকদল এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে কাজী রকিবউদ্দীন আহমাদ আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা নিরপেক্ষ। সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে। বিএনপি আগেও যখন অভিযোগ দিয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। এ ছাড়া গণমাধ্যমেও খবর আসলে ফোনেও খোঁজ নিয়ে আমরা ব্যবস্থা নিই।’
তিনি বলেন, ‘সংসদ আইন করেছে বিচার বিবেচনা করেই। আমরা নির্বাচন করেই অভ্যস্ত। তাই মেয়র পদে দলীয়ভাবে এবং কাউন্সিলর পদে নির্দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে অসুবিধা হবে না। তবুও এটা বড় নির্বাচন। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেব। বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে সভা করেই সেই বিষয়টি ঠিক করা হবে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সময় খুব কম। তাই খুব তাড়াতাড়ি কাজ করতে হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে না পারলে, জুনে নির্বাচন করতে হতো। কেননা, এর মাঝে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা আছে। আবার জুনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আছে। তাই ডিসেম্বর ছাড়া নির্বাচন করার উপায় নেই। এ জন্য তাড়াহুড়ো করেই সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমাদের হাতে সব দলের সঙ্গে আলোচনা করার সময় ছিল না।’
তিনি আরো বলেন, ‘সবার জন্যই নির্দেশ হচ্ছে- আইন সম্মতভাবেই কাজ করতে হবে। পৌর নির্বাচনে পূর্বের চাইতে আরো কুইক অ্যাকশন নেব। ব্যালট চুরি, ছিনতাই, এগুলির তথ্য পেলে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নেব। সাংবাদিকদের বলব, সবগুলো কেন্দ্রে যাবেন, কাভার করবেন। পুলিশ আপনাদের বাধা দেবে না। কিন্তু আপনাদের কাছে কার্ড (পরিচয়পত্র) থাকতে হবে। তাদের বলে দেব, গতবারের মতো যেন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে। তবে অনেক ভোটকেন্দ্রেই জায়গা খুব কম। সেখানে এক সঙ্গে অনেকের প্রবেশ ভোটগ্রহণের অসুবিধা হয়। তাই গ্রুপ করে প্রবেশ করলে সুবিধা হয়।’
সারাদেশের ৩২৩টি পৌরসভার মধ্যে ২৩৪টি পৌরসভার ভোট গ্রহণ করা হবে ৩০ ডিসেম্বর। নতুন আইন ও আচরণবিধি মেনে এ ভোটগ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী- রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩ ডিসেম্বর, যাচাই-বাছাই ৫ ও ৬ ডিসেম্বর এবং মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৩ ডিসেম্বর।
এ সময় সিইসি বলেন, সারাদেশে মোট ৩২৩টি পৌরসভার মধ্যে আগামী ফেব্রুয়ারি ২০১৬ পর্যন্ত যেসব পৌরসভার মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে এরূপ ২৩৪টি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ জানান, ২৩৪টি পৌরসভায় সাধারণ ওয়ার্ড সংখ্যা ২ হাজার ৯৫২টি ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সংখ্যা ৭৩৮টি। সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৩ হাজার ৫৮২টি। এসব পৌরসভায় মোট ভোটার ৭১ লাখ ৬২ হাজার ৩৯৬। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৩৫ লাখ ৮৬ হাজার ৩৫৬ জন। আর মহিলা ভোটার ৩৫ লাখ ৭৬ হাজার ৪০ জন।
এ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দায়িত্বপালন করবেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ৪১ জন, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ৬০ জন ও ১৩৩ জন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।